Wellcome to National Portal
Main Comtent Skiped

RMC

পল্লী মাতৃকেন্দ্র

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, যাদের অধিকাংশই পল্লী অঞ্চলে বসবাসকারী সুবিধাবঞ্চিত। এ সকল নারীদের ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি তথা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদফতর ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ হতে পল্লী মাতৃকেন্দ্র কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে অনগ্রসর, বঞ্চিত, দরিদ্র ও সমস্যাগ্রস্ত নারীদের সংগঠিত করে পরিবার ভিত্তিক দরিদ্রতা হ্রাস করা  হচ্ছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ের গ্রাম এলাকার লক্ষ্যভুক্ত নিম্ন আয়ের অনগ্রসর দরিদ্র নারীদের সংগঠিত করে তাদের নিজস্ব পুঁজি গঠন করা হয়। শুধুমাত্র জন্মদানে সক্ষম নারীদের অংশগ্রহণে পল্লী মাতৃকেন্দ্র কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলার ৪৯২ টি উপজেলায় এ কর্মসূচিটি চালু রয়েছে। পল্লী মাতৃকেন্দ্রের মূল লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামের দরিদ্র নারীদের ছোট পরিবার গঠনের উপকারিতা, বয়স্ক শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, মা ও শিশুযত্ন সম্পর্কে অবহিত এবং উদ্বুদ্ধকরণের পাশাপাশি দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান, সঞ্চয় সৃষ্টি ও অর্থকরী লাভজনক কর্মকান্ডের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা। প্রতিজন সদস্যকে ৫০০০ টাকা থেকে ২০০০০ টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করা হয়। ১০% সার্ভিস চার্জসহ সমান ১০টি কিস্তিতে সর্বোচ্চ ১ বছর মেয়াদে এ ঋণ পরিশোধযোগ্য।

পরিসংখ্যানঃ

  • মাতৃকেন্দ্রের সংখ্যা: ১৪,৮০৬ টি
  • আওতাভুক্ত ইউনিয়ন সংখ্যা: ৩১০৫টি
  • আওতাভুক্ত গ্রামের সংখ্যা: ১২৯৫৬টি
  • প্রাপ্ত তহবিল (২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটে সংস্থান অনুযায়ী) : ৯৮.২১ কোটি টাকা
  • বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ: ৮২.৩১ কোটি টাকা
  • পুনঃ বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ: ১৭০.৬০ কোটি টাকা
  • আদায়কৃত সার্ভিস চার্জ: ১২.২৯ কোটি টাকা
  • দলীয় সঞ্চয়ের পরিমাণ: ৬.৬৯ কোটি টাকা
  • মূল অর্থ আদায়ের হার: ৯৬%
  • উপকৃত পরিবার সংখ্যা: ৮.৮৭ লক্ষ

২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেটে ‘পল্লী মাতৃকেন্দ্র (আরএমসি) কার্যক্রম’ খাতে ২২.০০ কোটি টাকার বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছে। উক্ত অর্থের মধ্যে ১ম, ২য়, ৩য় ৪র্থ কিস্তি বাবদ ২২.০০ কোটি টাকার বিভাজন মাঠ পর্যায়ে প্রেরণ করা হয়েছে।

উদ্দেশ্য:

  • দরিদ্র নারীদের সংগঠিত করে উন্নয়নের মূল স্রো্তধারায় নিয়ে আসা;
  • দারিদ্র বিমোচন ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন;
  • পরিকল্পিত পরিবার তৈরীতে সহায়তা প্রদান;
  • জাতীয় জনসংখ্যা কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট সেবা;
  • সচেতনতামূলক উদ্বুদ্ধকরণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধি;
  • লক্ষ্যভুক্ত নারীদের সংগঠনের নিজস্ব পুঁজি গঠন।

সেবা গ্রহীতা:

  • বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক
  • নির্বাচিত গ্রামের বাসিন্দা
  • পল্লী মাতৃকেন্দ্রের কর্মদলের দলীয় সদস্য
  • পারিবারিক গড় আয়: 0-50000 টাকা, ‘ক’ শ্রেণী (দরিদ্রতম)
  • পারিবারিক গড় আয়: 500০1-60000 টাকা ‘খ’ শ্রেণী (দারিদ্র)
  •  পারিবারিক গড় আয়: 6000১ টাকার উদ্ধে (ধনী/দারিদ্র সীমার উদ্ধে) ‘গ’ শ্রেণী

 

কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টগণ:

সমাজসেবা অধিদপ্তরের কার্যক্রম শাখা এ কার্যক্রম টি বাস্তবায়ন করে থাকে। পরিচালক (কার্যক্রম) এর নেতৃত্বে একজন অতিরিক্ত পরিচালক, একজন উপ-পরিচালক, ২ জন সহকারী পরিচালক, ১ জন হিসাব রক্ষক, ১ জন সমাজসেবা অফিসার সদর দপ্তর পর্যায়ে এবং মাঠপর্যায়ে ৪৯২ জন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট। ৬৪ জেলায় ৬৪ জন উপ-পরিচালক ও ৯৩ জন সহকারী পরিচালক মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম তদারকি এবং মাঠ পর্যায় ও সদর দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে থাকেন। মাঠ পর্যায়ে উপজেলার কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি কার্যক্রম বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটির যথাক্রমে সদস্য-সচিব ও সভাপতি হিসেবে কাজ করে থাকেন।

 

সেবাদান কেন্দ্র:

  • ৪৯২টি উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়।

 

কার্যাবলি:

  • গ্রাম নির্বাচন;
  • গ্রাম জরিপ;
  • লক্ষ্যভুক্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সংগঠিত করে দলগঠন;
  • গ্রাম/মহল্লা কমিটি গঠন;
  • স্বাক্ষর জ্ঞান প্রদান;
  • বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ; যেমন: পরিবার পরিকল্পনা, বাড়ীর আঙ্গিনায় সব্জিচাষ, সামাজিক বনায়ন, নিরাপদ পানি পান, স্যানিটেশন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পুষ্টি সচেতনতা, পরিবার পরিকল্পনা, গর্ভবতী মায়ের যত্ন, শিশুদের টিকা দান, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, নারী নির্যাতন ও যৌতুক বিরোধী সচেতনতা, মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার রোধ, শিশুদের স্কুলে প্রেরণ ইত্যাদি
  • বৃত্তিমূলক ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান;
  • ক্ষুদ্রঋণ প্রাপ্তির জন্য নির্ধারিত আবেদন পত্রে আবেদন;
  • আর্থ সামজিক উন্নয়নে উপযুক্ত ঋণ গ্রহীতা নির্বাচন;
  • চুক্তি সম্পাদন;
  • সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান;
  • নিজস্ব পুঁজিসহ সংগঠন তৈরীতে সহযোগিতা।

 

নাগরিকগণের সহযোগিতার ক্ষেত্র:

  • সুবিধাভোগী কর্তৃক ঋণ প্রাপ্তির ২ মাস পর হতে সমান ১০ কিস্তিতে অথবা স্কীম ভেদে ১, ২ বা ৩ কিস্তিতে ঋণের অর্থ শতকরা ১০ ভাগ সার্ভিসচার্জসহ ফেরত দেয়া;
  • দলীয় সদস্য কর্তৃক নিয়মিত নির্ধারিত হারে সঞ্চয় করা;
  • কার্যক্রমের মাধ্যমে সদস্যদের যে সকল বিষয়ে সচেতন করা হয় তা মেনে চলা;
  • কোন সুবিধাভোগী প্রাপ্ত ঋণের অর্থ নিয়মমত পরিশোধ না করলে তা আদায়ে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করা;
  • সঠিক গ্রাম/মহল্লা ও উপযুক্ত ঋণ গ্রহীতা নির্বাচনে কর্তৃপক্ষকে তথ্য সরবরাহ ও সহযোগিতা;
  • ঋণ প্রদানে কোন অসচ্ছতা পরিলক্ষিত হলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট অবহিত করা।

সেবা প্রদানের সময়সীমা:

  • গ্রাম/মহল্লা নির্বাচনের পর ১ম বার ঋণ প্রদান ১ মাস;
  • পুনবিনিয়োগ/২য়/৩য় পর্যায়ের ঋণ প্রদান, আবেদনের পর ২০ দিন।